NEEDFOREVERYTHING
Tuesday, November 13, 2012
Saturday, November 10, 2012
NEEDFOREVERYTHING: জিম্বাবুইয়ান ডলারের আত্মকাহিনী
NEEDFOREVERYTHING: জিম্বাবুইয়ান ডলারের আত্মকাহিনী: জিম্বাবুইয়ান ডলারের আত্মকাহিনী ক্রিকেটের বদৌলতে জিম্বাবুয়ে দেশটা এখন বাংলাদেশের সবার কাছেই মোটামুটি পরিচিত। আফ্রিকার একটা দেশ। ত...
Friday, November 9, 2012
জিম্বাবুইয়ান ডলারের আত্মকাহিনী
জিম্বাবুইয়ান ডলারের আত্মকাহিনী |
ক্রিকেটের বদৌলতে জিম্বাবুয়ে দেশটা এখন বাংলাদেশের সবার কাছেই মোটামুটি পরিচিত। আফ্রিকার একটা দেশ। তো আজ আমি সেই দেশের মুদ্রার কিছু মজার অভিজ্ঞতা শোনাব। অনেকেই হয়ত জানেন, অনেকেই হয়ত জানেন না। প্রথমেই বলে নেই, দেশটির মুদ্রার নাম ডলার। কিন্তু অচিন্ত্যনীয় মূল্যস্ফীতির কারণে এই মুদ্রাটির ইজ্জত কোন পর্যায়ে নেমে যেতে পারে সেই কাহিনীই আজকে আপনাদের বলব ছবির মাধ্যমে…
আচ্ছা, এই ছেলেটি এত খুশি কেন? মিলিওনিয়ার হয়ে গেছে তাই?? এই ছেলেটি লেনদেন করছে ২০০,০০০ $ এর নোট দিয়ে !!
ক্রিকেটের বদৌলতে জিম্বাবুয়ে দেশটা এখন বাংলাদেশের সবার কাছেই মোটামুটি পরিচিত। আফ্রিকার একটা দেশ। তো আজ আমি সেই দেশের মুদ্রার কিছু মজার অভিজ্ঞতা শোনাব। অনেকেই হয়ত জানেন, অনেকেই হয়ত জানেন না। প্রথমেই বলে নেই, দেশটির মুদ্রার নাম ডলার। কিন্তু অচিন্ত্যনীয় মূল্যস্ফীতির কারণে এই মুদ্রাটির ইজ্জত কোন পর্যায়ে নেমে যেতে পারে সেই কাহিনীই আজকে আপনাদের বলব ছবির মাধ্যমে…
আচ্ছা, এই ছেলেটি এত খুশি কেন? মিলিওনিয়ার হয়ে গেছে তাই?? এই ছেলেটি লেনদেন করছে ২০০,০০০ $ এর নোট দিয়ে !!
কিন্তু মজার ব্যাপার হল এই ২০০,০০০ ডলারের নোটটির মান US $ 0.10 এর চেয়েও কম…
২২ শে ডিসেম্বর ২০০৭। ৫০০,০০০ ডলারের একটি নতুন নোট বাজারে ছাড়া হল…
মূল্যস্ফীতি বেড়েই চলল, এরপর বাজারে ছাড়া হল ৭৫০,০০০ ডলারের নোট…
জানুয়ারী ২০০৮। বাজারে এল নতুন নোট, ১০ মিলিয়ন ডলার !!
দেখুন, এত বড় টাকা পেয়ে লোকটি কত খুশী
মজার ব্যাপার হল, এই US $ 10 এর নোটটি, জিম্বাবুইয়ান ১০ মিলিয়ন ডলার নোটের চেয়েও ১০ গুন বেশী মূল্যমানের অধিকারী !!!
দেখুন, এই ছেলেটি এত্ত এত্ত ডলার পেয়ে কি খুশী !! তবে এটা কি আসল না ব্যাঙ্গাত্মক আনন্দ সেটা প্রশ্নের বিষয়…
ছবির এই বেচারা সুপার মার্কেটে যাচ্ছে কেনাকাটা করার জন্য। মুদ্রার বিনিয়ময় হার হল, ১ ইউএস ডলার = ২৫ মিলিয়ন জিম্বাবুইয়ান ডলার।
এই যে ডলারের স্তুপ দেখতে পাচ্ছেন এর মূল্যমান কত জানেন?? মাত্র ১০০ ইউএস ডলার !!
অগত্যা ৫০ মিলিয়ন ডলারের নোট চালু করা হল…
তাতেও পোষাচ্ছে না, এবার এল ২৫০ মিলিয়ন ডলারের নোট !!
আচ্ছা দেখুনতো এই টি শার্টটির দাম কত?? বেশী না, এই ৩ বিলিয়ন ডলারের মত…
ওরে সোনা, এতেও হয় না রে !! মে ২০০৮, ৫০০ মিলিয়ন ডলারের নোট বাইর হইল !!
জুন ২০০৮, ২৫ এবং ৫০ বিলিয়ন ডলারের নোট বাহির হইল !!
শালার মূল্যস্ফীতি এমন বাড়াই বাড়ল যে এর পরে ১০০ বিলিয়ন ডলারের নোট বাহির হইল !!!
আচ্ছা এই ১০০ বিলিয়ন ডলার দিয়ে আপনি কি কিনতে পারেন?? উদাহরণ স্বরুপ, এই তিনটি ডিম কিনতে পারেন !! (৩ বিলিয়ন ডলারে ১ টি টি শার্ট এখনতো সস্তাই মনে হচ্ছে… )
দেখুন লোকজন কিভাবে রেস্টুরেন্টে যেত…
দেখুন লোকজন কিভাবে রেস্টুরেন্টে যেত…
একটা স্যাম্পল হোটেল বিল দেখুন !!!
শেষ পর্যন্ত, অগাস্ট ২০০৮ এ জিম্বাবুইয়ান সরকার তাদের মুদ্রাকে অবমূল্যায়ন করল তাদের নোটগুলো থেকে ১০ টা শুন্য সরিয়ে দিয়ে…
কিন্তু, মূল্যস্ফীতি বাড়তেই থাকল এবং সেপ্টেম্বরে গিয়েই দেখুন ৪ টা টমেটো কিনতে কত ডলার লাগে !!
অবস্থা দেখেন, এক টুকরা রুটি কিনতে কত ডলার লাগে !!!
এরপর আবার শুরু হইল… সেই পুরান কাহিনী… সেপ্টেম্বরে ২০,০০০ ডলারের নোট !!
এরপর ৫০,০০০ ডলারের নোট…
এরপর ৫০০,০০০ এবং ১,০০০,০০০ ডলারের নোট ও ছাপা হল, কিন্তু মূল্যস্ফীতি কোন পর্যায়ে পৌছেছিল সেটা কেউই বলতে পারছিল না, দ্রব্যমূল্য লাগাম ছাড়া, লোকজন শেষ পর্যন্ত টয়লেটে এই ধরণের নোটিশ দিতে বাধ্য হলঃ
হায় আল্লাহ, কি অবস্থা !!
ছবি ও তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট
পোষ্টটি লিখেছেন টিজে - ওয়েস্ট লাইফ
Thursday, November 8, 2012
বিশ্বসেরা ১২ উদ্যোক্তার তালিকা, রয়েছেন বাংলাদেশি একজন
সালাম সবাইকে। আসা করি ভালো আছেন সবাই। সেদিন প্রথম আলোতে চমৎকার একটি ফিচার পড়লাম অসাধারণ লেগেছে পড়ে। তাই আপনাদের শাথে শেয়ার করতে আসে পরেছি। বিশ্বসেরা এক ডজন উদ্যোক্তাদের নাম এবং তাদের উদ্যোগ সম্পর্কে সংক্ষেপে জেনে নেয়া যাক। উনারা পৃথিবীর সর্বসেরা উদ্যোক্তার তালিকায় রয়েছেন। আমাদের জন্য সু সংবাদ হল এই ১২ জনের মাঝে আমাদের বাংলাদেশি একজন রয়েছেন। ভাবছেন কে? নিজের দেখে নিন তাহলে। এ যেন বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশীকে আরেকবার পরিচিত করে দীয়ার মত। এটা ত আসলে আমাদেরই গর্ব। তাহলে দেখে নিন কারা আছেন এই ১২ এর তালিকায়।
1. স্টিভ জবস (অ্যাপল)
2. বিল গেটস (মাইক্রোসফট)
3. ফ্রেড স্মিথ (ফেডএক্স)
4. জেফ বেজোস (অ্যামাজন)
5. ল্যারি পেজ এবং সার্গেই ব্রিন (গুগল)
6. হাওয়ার্ড স্কাল্টজ (স্টারবাকস)
7. মার্ক জুকারবার্গ (ফেসবুক)
8. জন ম্যাকি (হোল ফুডস)
9. হার্ব কেলেহার (সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইন্স)
10. নারায়ণ মূর্তি (ইনফোসিস)
11. স্যাম ওয়ালটন (ওয়ালমার্ট স্টোরস)
12. মুহাম্মদ ইউনুস (গ্রামীণ ব্যাংক)
১৯৮৪ সালে অ্যাপল কার্যালয়ে
স্টিভ জবস বা অ্যাপলের নাম না জানলে আপনাকে মোটামুটি প্রযুক্তি সম্পর্কে অজ্ঞ হিসেবেই ধরে নেবেন বাকিরা। স্টিভ জবসের প্রতিষ্ঠান অ্যাপলের বর্তমান বাজার মূল্য ৫৪৬ বিলিয়ন ডলার এবং প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ করছেন ৬৩ হাজার ৩০০ জন কর্মী। নতুন কোন উদ্যোক্তার কাছে স্টিভ জবস একটি বিশ্ববিদ্যালয়। তাকে ধরা হয় গত শতাব্দীর সবেচেয়ে মেধাবী, দূরদর্শী, সৃষ্টিশীল উদ্যোক্তা হিসেবে গণ্য করা হয় তাকে। উদ্যোক্তাদের
জন্য স্টিভ জবসের উপদেশ ছিলো বাজার গবেষণা এবং বিশ্লেষকরা আপনার সৃষ্টিশীলতার
কাছে কিছুই নয়। আর তাইতো ম্যাক কম্পিউটার, আইপড, আইফোন, আইপ্যাড দিয়ে পৃথিবীর তথ্য প্রযুক্তির ধারণাকেই বদলে দিয়েছেন এই উদ্যোক্তা।
১৯৮৩ সালে তরুন বিল গেটস
মাইক্রোসফট পুরো কম্পিউটার জগতকেই নিজেদের মতো করে তৈরি করে নিয়েছে। আজকে আপনি কম্পিউটারে যাই করতে জানেন মাইক্রোসফটের
সফটওয়্যার ছাড়া অসহায় বোধ করবেন। আর এই প্রতিষ্ঠানটি
যিনি গড়ে তুলেছেন তিনি বিল গেটস। মাইক্রোসফটের বর্তমান বাজার মূল্য ২৭৩.৫ বিলিয়ন ডলার এবং বিশ্বব্যাপী মাইক্রোসফটে
কাজ করছেন ৯০ হাজার কর্মী। বিল গেটস বর্তমানে সমাজসেবামূলক সংগঠন বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের সহ সভাপতি হিসেবে বিশ্বব্যাপী মানবতার কল্যাণে কাজ করেযে যাচ্ছেন। একসময়কার বিশ্বের সেরা ধনী হিসেবে স্বীকৃত বিল গেটসের উপদেশ হলো, ‘তুখোড় বুদ্ধিমান মানুষদের খুঁজে বের করুন এবং ছোট দলে কাজ করুন’।
১৯৭০ এর দশকে ফ্রেড স্মিথ
ফেডারেল এক্সপ্রেস বা ফেডএক্স এর ধারণাটি ফ্রেড স্মিথ দিয়েছিলেন ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে
তার টার্ম পেপার হিসেবে। কিন্তু ভিয়েতনাম যুদ্ধে কাজ করার অভিজ্ঞতা তাকে ফেডএক্স চালু করতে সবচেয়ে বেশি উদ্বুদ্ধ করে বলে জানান এই উদ্যোক্তা। ১৯৬৭ সাল থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত তিনি ভিয়েতনাম যুদ্ধে দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। প্রথমে মার্কিন নৌবাহিনীর রাইফেল প্ল্যাটুন লিডার এবং পরে এয়ার কনট্রোলার হিসেবে। যুদ্ধের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে স্মিথ শিক্ষাগ্রহণ করেন যে একইসাথে বিপুল পরিমাণ সেনা এবং তাদের খাদ্য ও অস্ত্র গোলাবারুদ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরিয়ে নেয়াটা দুষ্কর এবং সময়সাপেক্ষ। আর বিমানের মাধ্যমে দুর্গম অঞ্চলে সাহায্য পৌঁছে দেয়াটাও মুশকিল। আর সেখান থেকেই ফেডারেল এক্সপ্রেস কর্পোরেশন চালু করেন তিনি যারা বিমানে পণ্য নিয়ে তা গাড়িতে করে যে কোন স্থানে পৌঁছে দেবে।
জেফ বেজোস ১৯৯৮ সালে
ই-কমার্স বা ইন্টারনেটে বেচা কেনার ব্যাপারে যারা মোটামুটি খবর রাখেন তারা অ্যামাজনের সাথে পরিচিত। প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান বাজার মূল্য ৮৪ বিলিয়ন ডলার এবং কর্মী সংখ্যা ৫৬ হাজার ২০০। নিউইয়র্কে বসের উপর রাগ করে চাকরি ছেড়ে দিয়ে আমেরিকা ঘুরতে বেরিয়ে পড়েন জেফ বেজোস। আর ঘুরতেই ঘুরতেই সফটওয়্যার ডেভেলপারদের
বিশাল সংখ্যা সম্পর্কে তার ধারণা হয়। আর তার ওপর ভরসা করেই ১৯৯৪ সালে শুরু করেন ইকমার্স সাইট অ্যামাজনের যাত্রা। আজকে যারা অল্পতেই মুনাফার জন্য হা পিত্যেশ করেন তারা শুনলে অবাক হবেন প্রতিষ্ঠার ৬ বছর পরে লাভের মুখ দেখে প্রতিষ্ঠানটি। আর এই দীর্ঘ সময় সাহসী উদ্যোক্তার মতোই প্রতিষ্ঠানটিকে টেনে নিয়ে গেছেন বেজোস। একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান তৈরির চেয়ে একটি দীর্ঘস্থায়ী
প্রতিষ্ঠান তৈরির ব্যাপারেই মনোযোগী ছিলেন এই উদ্যোক্তা। কাজের চাপ এবং হতাশা যেন তাকে গ্রাস করতে না পারে সেজন্য প্রায়ই ঘুরতে বেরিয়ে পড়তেন তিনি আর এসব থেকেই নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে কাজ করার উৎসাহ পেতেন তিনি। তাইতো উদ্যোক্তাদের জন্য তার উপদেশ ছোট ছোট করে হলেও নিয়মিত ঘুরতে বেরিয়ে পড়ুন।
১৯৯৯ সালে গুগলের কার্যালয় যখন গ্যারেজে
গুগল ছাড়া ইন্টারনেট জীবন তো কল্পনাই করা যায়না এখনকার পৃথিবীতে। ছোট থেকে বড় যে কোন প্রয়োজনে যে কোন সমস্যার সমাধানে মনের অজান্তেই কিবোর্ডে হাত রেখে গুগল সার্চ দিয়ে বসি আমরা সবাই। আর এই গুগলের দুই প্রতিষ্ঠাতা লেরি পেজ এবং সার্গেই ব্রিন। প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান বাজার মূল্য ২০৩.২ বিলিয়ন ডলার এবং কর্মীসংখ্যা ৩২ হাজার পাঁচশো। এত দামী প্রতিষ্ঠান যারা চালাচ্ছেন তাদের উপদেশ হলো, ‘আবিষ্কারের পেছনে কোন টাকার খরচ করবেন না’। ১৯৯৬ সালে লেরি পেজের বয়স ছিলো ২৩ বছর। এবং সেই বয়সে হঠ্যাৎ তার ইচ্ছে হলো পুরো ইন্টারনেট দুনিয়াকে কম্পিউটারের
ভেতরে নিয়ে আসা। যেই কথা সেই কাজ। লিখতে বসে গেলেন নিজের পরিকল্পনাগুলো। পুরোনো দিনের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি মাঝরাতের দিকে লেখা শেষ করলাম এবং নিজেকে বোঝাতে সক্ষম হলাম যে এই ব্যাপারগুলো কাজ করবে’। পেজের সেই পরিকল্পনা যে কাজ করেছে তা তো আমরা প্রতিদিনিই ইন্টারনেটে কাজ করতে গেলে টের পাই। পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত সার্চ ইঞ্জিন হচ্ছে গুগল।
১৯৯৩ সালে হাওয়ার্ড স্কাল্টজ
মূল্যস্ফীতি এবং চাকুরিচ্যুতির এই যুগে অনেক বিশ্লেষকই বলেছিলেন হাওয়ার্ড স্কাল্টজ এর চেইন কফিশপ স্টারবাকস টিকে থাকবে না। কিন্তু আট বছর দীর্ঘ বিরতির পর ২০০৮ সালে দ্বিতীয়বারের
মত প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে স্টারবাকস লাভের মুখ দেখতে শুরু করে। একজন সফল উদ্যোক্তার মতোই তিনি প্রতিষ্ঠানটির
আর্থিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির বাজার মূল্য ৪০ বিলিয়ন ডলার এবং কর্মীর সংখ্যা ১ লাখ ৪৯ হাজার। ‘সবসময় পুরোনো পদ্ধতিকে চ্যালেঞ্জ করুন’-এমন উপদেশ তার মুখেই শোভা পায়।
২০০৬ সালে পালো অল্টোতে জুকারবার্গ
সামাজিক নেটওয়ার্কিং
সাইটের ইতিহাস পাল্টে দেয়া সাইটের নাম ফেসবুক আর এই ইতিহাস স্রষ্টার নাম মার্ক জুকারবার্গ।
মাত্র ৮ বছর আগে ফেসবুকের যাত্রা শুরু হয়েছিলো হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে জুকারবার্গের কক্ষে। তাই স্টিভ জবস, বিল গেটসের মতোই শিক্ষাজীবন অসমাপ্ত রাখা এই উদ্যোক্তাকে বলা হয় তাদের যোগ্য উত্তরসূরী। ফেসবুকের বর্তমান বাজারমূল্য আনুমানিক ৭৫ থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার। আর বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে
কাজ করছেন ৩ হাজার ২০০ কর্মী। নতুন উদ্যোক্তাদের
জন্য জুকারাবার্গের
উপদেশ ‘বিভ্রান্তিকে
বিব্রত করুন’।
২০০৫ সালে নিজের জগতে জন ম্যাকি
১৯৭৮ সালে জন ম্যাকি এবং তার তৎকালীন বান্ধবী রিনি লসন মিলে তাদের প্রথম সবজির দোকান চালু করেন। এই উদ্যোগের পেছনে তাদের উদ্দেশ্য ছিলো সুখী ভাবে বাঁচার জন্য আনন্দে থাকা এবং সংখ্যায় অল্প হলেও কিছু লোককে স্বাস্থ্যকর উপায়ে বাঁচতে সাহায্য করা। উস্কোখুস্কো চুল আর মুখে অগোছালো দাড়ি, বয়স মাত্র ২৫ বছর। জন ম্যাকি তখন কলেজ ড্রপআউট অর্থ্যাৎ লেখা পড়া শেষ করেন নি। উদ্যোগটি নিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘ব্যবসায় মুনাফা বা লাভ হচ্ছে একটি প্রয়োজনীয় শয়তান’! আর আজকে হোল ফুডসের রয়েছে ৩০০ এর অধিক সুপারস্টোর এবং ৫৬ হাজার কর্মী যাদেরকে ‘টিম মেম্বার’ বলা হয়। মানুষকে স্বাস্থ্যসম্মত, ভালো খাবার খাওয়ানোর উদ্দেশ্যে যে ব্যবসা শুরু করেছিলেন জন একসময় মুনাফার দিকে থেকে তা ছাড়িয়ে গেছে অনেক মূলধারার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকেও। প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান বাজার মূল্য ১৫.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর এই প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তা জন ম্যাকির উপদেশ হলো, ‘উদ্দেশ্য মানুষকে উৎসাহিত করে’।
১৯৯৪ সালে ডালাসে কেলেহার
হার্ব কেলেহার যখন ওয়েসলিন বিশ্ববিদ্যালয়ের
ইংরেজি নিয়ে পড়ালেখা করেন তখন তাকে তিনটি কাজের কথা বলা হয়েছিলো যা তার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে। কাজ তিনটি হলো সাংবাদিকতা, সম্পাদক হওয়া অথবা আইনজীবী হিসেবে কাজ করা। কেলেহার আইনকে বেছে নিয়েছিলেন এবং এটা তার জন্য শুভ ছিলো। এবং এ কারণেই দীর্ঘ পাঁচ বছরের আইনী লড়াই শেষে ১৯৭১ সালের জুনে প্রতিদ্বন্দ্বীদের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তিনি সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইন্সকে আদালতের কাঠগড়া থেকে নামিয়ে আকাশে ওড়াতে সক্ষম হয়েছিলেন। যেখানে সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে মন্দাভাব, একের পর এক নামকরা প্রতিষ্ঠান মুখ থুবড়ে পড়ছে সেখানে টানা ৩৯ বছর যাবৎ ধরে লাভের মুখ দেখে যাচ্ছে সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইন্স। যুক্তরাষ্ট্রের
বিমান ব্যবসার ইতিহাসে এটা এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। কিভাবে এটা সম্ভব হলো? এর কারণ কেহেলারের প্রতিষ্ঠান সবার আগে নিশ্চিত করেছে কম খরচে উন্নত গ্রাহক সেবা। খরচ একদম কমিয়ে এনে গ্রাহককে সর্বোচ্চ সুবিধা দেয়ার প্রচেষ্টাই সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইন্সকে
অন্য সবার থেকে পৃথক করে রেখেছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির
বাজার মূল্য ৬.৪ বিলিয়ন ডলার এবং এর সাথে জড়িয়ে আছেন ৪৫,৯৩২ জন কর্মী। উদ্যোক্তাদের জন্য কেহেলারের পরামর্শ হচ্ছে, ‘আপনার গ্রাহককে প্রথম করে তুলুন’।
২০০২ সালে ব্যাঙ্গালোরে ইনফোসিস ক্যাম্পাসে নারায়ন মূর্তি
১৯৭৪ সালে নারায়ন মূর্তি ছিলেন একজন কট্টর বামপন্থী প্রকৌশলী। এবং একদিন ফ্রান্স থেকে ট্রেণে চড়ে নিজের দেশ ভারতে ফিরছিলেন। ট্রেণের ভেতর এক সহযাত্রীর সাথে তিনি বাম ঘরাণার আন্দোলন নিয়ে কথা বলছিলেন। পাশের এক যাত্রী ভেবেছিলেন মূর্তি হয়তো বুলগেরিয়ার সমাজতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধাচারণ
করছেন। অতএব তিনি পুলিশ ডেকে আনলেন এবং নারায়ন মূর্তিকে পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়ে ট্রেণের একটি বন্ধ কামড়ায় ৭২ ঘন্টা আটকে রাখলো কোন রকমের দানা, পানি ছাড়া। এবং তাকে তুরষ্কের ইস্তাম্বুলে ফেলে রেখে ট্রেণটি চলে যায়। এই অপমান মূর্তিকে দারুনভাবে অঘাত করে এবং তিনি অনুভব করেন যদি তাকে সত্যিকার অর্থেই বিপ্লব ঘটাতে হয় তাহলে বামপন্থীরা যে রাস্তা পরিত্যাগ করেছে সেই রাস্তাতেই যেতে হবে। এই একটি ঘটনাই পাল্টে দিয়েছে নারায়ণ মূর্তির জীবন। ২১ বছর ধরে তিনি ইনফোসিস এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ৬ জন সহ প্রতিষ্ঠাতার একজন। একজন মূর্তির মাধ্যমে আইটসোর্সিংয়ে ভারতের মত দেশ বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আয় করেছে এবং প্রমাণ করেছে বিশ্বে যদি আউটসোর্সিংয়ের
কাজ করতে হয় তাহলে তা ভারতেই করতে হবে। জীবন বড় হতে হলে কি দরকার? নারায়ণ মূর্তি বলেন, ‘আজকে কষ্ট করুন, আগামীকাল সুফল পেয়ে যাবেন’। সফলতা কখনোই সহজে হাতের মুঠোয় ধরা দেবে না, অনেক কষ্টে তাকে পেতে হয়। ৬৫ বছর বয়সী সফল এই উদ্যোক্তার মতে, ‘পুরো ব্যাপারটাই হচ্ছে কঠোর পরিশ্রম, হাজারো হতাশা নিয়ে পরিবার থেকে দূরে থাকা এই আশায় যে একদিন আপনি যা চাইছেন তা হবে এবং এই আপনার ত্যাগ স্বার্থক হবে’। বর্তমানে ইনেফাসিসের বাজার মূল্য ৩২ বিলিয়ন ডলার এবং কর্মীসংখ্যা ১ লাখ ৪৫ হাজার ৮৮ জন।
১৯৮৪ সালে ৬৪ বছর বয়সী স্যাম ওয়ালটন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের
ইতিহাসে সবচেয়ে সফল খুচরা ব্যবসায়ীর নাম স্যাম ওয়ালটন। তার প্রতিষ্ঠান ওয়াল মার্ট স্টোরস এর বর্তমান বাজার মূল্য ৩৬.৫ বিলিয়ন ডলার এবং কর্মী সংখ্যা ২ মিলিয়ন। পাশের ছবিটি দেখে অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন এই বুড়ো জোকারটা কে? ইনিই সেই বিখ্যাত স্যাম ওয়ালটন। ছবিটি ১৯৮৪ সালে তোলা ওয়ালস্ট্রীটের রাস্তায় ৬৬ বছর বয়সী ওয়ালটন হুলা নাচ নেচেছিলেন। এটা নিয়ে সমালোচকরা নানা কথা বলেছিলেন তখন। তারা বলেছিলেন, ক্রেতাদের আকর্ষনের জন্য এরকম সং সাজার কোন মানে হয় না। ওয়ালটন কারো কথার কোন জবাব দেননি তখন। পরবর্তীতে তার আত্মজীবনী ‘স্যাম ওয়ালটন: মেড ইন আমেরিকা’ তে তিনি লিখেছিলেন, ‘সেদিন যারা আমার নাচের সমালোচনা করেছিলেন তারা হয়তো বুঝতে পারেন নি ওয়ালমার্ট স্টোরে সবসময়ই এরকম ঘটনা ঘটে থাকে’। পাঠকরা আবার ভেবে বসবেন না যে ওয়ালমার্টের কর্মীরা মনে হয় কাজ করেন না, এসব ভাড়ামি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। সারাদিন তারা প্রচন্ড পরিশ্রম করেন এবং বললে হয়তো বিশ্বাস করবেন না পরিশ্রমের সাথে আবিস্কারও করেন তারা। যে কারনে ১৯৬২ সালে ওয়ালটন প্রথম ওয়ালমার্ট স্টোরটি খুলেছিলেন তা হলো খুচরা ব্যবসার জগতে শৃঙ্খলা নিয়ে আসা এবং গ্রাহকদের সেরা পণ্যটা দেয়া। ১৯৯২ সালে ৭৪ বছর বয়সে উদ্যোক্তা স্যাম ওয়ালটন মারা গেলেও মৃত্যুর আগে তিনি আমেরিকার খুচরা ব্যবসার ইতিহাস সাফল্যের সাথে লিখে গিয়েছেন। কত কম দামে ক্রেতাদের ভালো পণ্য দেয়া যায় এটাই ছিলো ওয়ালটনের প্রধান চিন্তা। তাইতো খুচরা ব্যবসার কৌশল সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ‘কম দামে কিনুন, বেশি মাত্রায় কিনুন এবং সস্তায় বিক্রি করুন’। আর উদ্যোক্তাদের জন্য তার উপদেশ, ‘মানুষকে সেটাই দিন যা তারা চায়’।
১৯৯৮ সালে মুহম্মদ ইউনুস
বাংলাদেশি মুহম্মদ ইউনুসকে কে না চেনেন? নোবেল বিজয়ী প্রথম বাংলাদেশি, গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা। বিশ্বসেরা ১২ উদ্যোক্তার তালিকায় থাকা একমাত্র বাংলাদেশিও তিনি। অনেক ছোট খাট উদ্যোগ যে একসময় বিশালাকৃতি ধারণ করতে পারে এবং মানুষের স্বপ্নকে সত্যি করতে পারে তার জ্বলন্ত উদাহরণ মুহম্মদ ইউনুস এবং তার প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংক। গ্রামীণ ব্যাংককে বলা হয় গরীবের ব্যাংক। ১৯৭০ এর দশকে অধ্যাপক ইউনুস তখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি পড়ান। ক্লাস নেয়ার পাশাপাশি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়
সংলগ্ন জোবরা গ্রামের গরীব মানুষদের বেতের ঝুড়ি তৈরির জন্য কিছু টাকা ধার দিলেন। কিন্তু এই কয়েক হাজার টাকাকে কাজে লাগিয়ে এই দরিদ্র মানুষরা যে স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে পারেন এবং সময় মত ঋণের অর্থ শোধ করে দেবেন তা ইউনুস স্বপ্নেও ভাবেন নি। জোবরা গ্রামের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি আশেপাশের আরো বেশ কয়েকটি গ্রামে ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্প নিয়ে কাজ করতে থাকলেন। ১৯৮৩ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন গ্রামীণ ব্যাংক। যা ২০০৬ সালে নোবেল পুরষ্কারে ভূষিত হয়। সবচেয়ে বড় কথা ক্ষুদ্রঋণের ধারণাটি মুহম্মদ ইউনুসের মাধ্যমে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পদে এবং বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ১০০টি দেশে দারিদ্র্য বিমোচনে এই কৌশল ব্যবহৃত হচ্ছে। তাই মুহম্মদ ইউনুসের উপদেশ হচ্ছে, ‘ছোটখাটো উপহার বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে’।
মুল সুত্রঃ প্রথম আলো পত্রিকা
Subscribe to:
Posts (Atom)